প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) অবমাননা করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে লিবিয়া। দেশটির জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে অবিলম্বে ম্যাক্রোঁকে বিশ্ব মুসলিমের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মাদ আল-কাবলাবি সোমবার ত্রিপোলিতে এক বিবৃতিতে বলেন, ম্যাক্রোঁর ইসলামি অবমাননাকর বক্তব্যে তার প্রতি মানুষের ঘৃণা বেড়েছে। তিনি দেশে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।
লিবিয়ার এই মুখপাত্র ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে দেয়া এক রায়ের কথা উল্লেখ করেন যেখানে বলা হয়েছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননা বাক স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না। তিনি এই উসকানিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করে বিশ্ব মুসলিমের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য ম্যাক্রোঁর প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে লিবিয়া সরকারের সর্বোচ্চ পরিষদ ম্যাক্রোঁর ইসলাম অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে ফ্রান্সের বিভিন্ন কোম্পানিকে লিবিয়া থেকে বহিস্কারের আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে লিবিয়ায় আরও যেসব ফরাসি কোম্পানি কাজ করছে তাদের সঙ্গেও চুক্তি বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে এই পরিষদ।
গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে দেশটির এক স্কুল শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত কার্টুন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের কারণে ক্ষুব্ধ ওই কিশোর স্কুল শিক্ষককে হত্যা করেন।
পরে ফ্রান্সের সরকার ওই স্কুল শিক্ষককে দেশটির সর্বোচ্চ মরণোত্তর পদকে ভূষিত এবং বিভিন্ন ভবনের গায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত সেই কার্টুনের প্রদর্শন শুরু করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই কার্টুনের প্রদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।
ফরাসি পত্রিকা শার্লি এবদোও সম্প্রতি মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী (সা.)-এর অবমাননাকর কার্টুনগুলো পুনর্মুদ্রণ করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও কূটনৈতিক রীতিনীতি ভুলে ঘোষণা করেছেন যে, তার দেশে এ ধরনের কার্টুন প্রকাশ অব্যাহত থাকবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের এমন ইসলাম অবমাননাকর বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। বিভিন্ন মুসলিম দেশ ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং ম্যাক্রোঁকে তার ইসলাম-বিদ্বেষী বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।